Germany HigherStudy(CGPA)

Courtesy: BESSiG

জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করতে কত সিজিপিএ লাগে?
প্রথমে যেই জিনিসটা বলা উচিত সেটা হচ্ছে জার্মান গ্রেডিং সিস্টেম এবং বাংলাদেশের গ্রেডিং সিস্টেম ভিন্ন। জার্মানিতে সর্বোচ্চ পয়েন্ট ধরা হয় 1 এবং সর্বনিম্ন পয়েন্ট ধরা হয় 4। আমাদের দেশে এই জিনিসটা উলটো মানে আমাদের ৪ হচ্ছে সর্বোচ্চ সিজিপিএ এবং সর্বনিম্ন সিজিপিএ ভার্সিটি ভেদে 2.0/2.5। এখন জার্মান ভার্সিটিতে আবেদন করতে হলে আমাদের এই সিজিপিএ কে জার্মান সিজিপিএ তে কনভার্ট করতে হয়। আমরা জানি জার্মানিতে দুইভাবে ভার্সিটিতে আবেদন করা যায়। একটি হচ্ছে ইউনি এসিস্ট এর মাধ্যমে, অন্যটি হচ্ছে সরাসরি ভার্সিটিতে। ইউনি এসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করলে ওরা আপনার সিজিপিএ কে জার্মান সিজিপিএ তে কনভার্ট করে ভার্সিটিকে সব ডকুমেন্টস পাঠিয়ে দেয়। সরাসরি ভার্সিটিতে আবেদন করলে ওরা একই প্রক্রিয়ায় আপনার সিজিপিএকে জার্মান গ্রেডিং সিস্টেমে নিয়ে যায়। এখন এটা সাধারনত কিভাবে করে? নিচে আমি এটার ক্যালকুলেশন দিয়ে দিলাম।
Your German CGPA= ((Nmax-Navg)/(Nmax-Nmin))*3+1
এখানে, Nmax হচ্ছে সর্বোচ্চ নম্বর, Nmin হচ্ছে পাস নম্বর এবং Navg হচ্ছে প্রাপ্ত গড় নম্বর। এখানে একটি বিষয় পরিষ্কার করা উচিত আর সেটা হল, Nmin মানে পাস নম্বর। এটা বাংলাদেশের ভার্সিটি ভেদে ভিন্ন হয়। কোন কোন ভার্সিটির পাস নাম্বার হচ্ছে 2.0। আবার কোন কোন ভার্সিটির 2.5। এটা আপনার ভার্সিটির ট্রান্সক্রিপটে উল্লেখ থাকে। যেমন, আমার ভার্সিটির পাস নাম্বার ছিলো 2.0। সুতরাং ইউনি এসিস্ট পাস নাম্বার 2.0 দিয়ে হিসেবে করে আমার সিজিপএ ক্যালকুলেশন করেছিলো। আর সর্বোচ্চ নাম্বার 4.0 যেটা বাংলাদেশের প্রায় সব ভার্সিটির সমান। এখন, আমার ব্যাচেলার সিজিপিএ ছিলো 3.82। আমার সর্বোচ্চ নম্বর ছিলো 4.0। নিচে বুজার সুবিধার্তে আমার সিজিপএ ক্যালকুলেশনটা দিলাম,
My German CGPA = ((4-3.82)/(4-2))*3+1 = 1.27
এইভাবেই আপনার সিজিপিএ জার্মান গ্রেডিং এ কনভার্ট করা হবে।
এখন আসি মুল বিষয়ে, জার্মানিতে পড়তে কত সিজিপএ লাগে?
প্রথমে আশা করি আপনারা জার্মান গ্রেডিং সিস্টেম বুজতে পেরেছেন। এখন জার্মানিতে ভার্সিটিগুলোর সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট কি রকম হয়!
বেশিরভাগ জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট থাকে জার্মান গ্রেডে 2.5 বা তার থেকে ভাল। এই গ্রেডটা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিজিপিএ এর প্রায় ৭০%। এখন আপনার বাংলাদেশ ভার্সিটির সর্বনিম্ন পাস মার্ক 2.0 এবং সবোর্চ্চ পাস মার্ক 4.0 হয় তাহলে এই গ্রেডিংটা বাংলাদেশের সিজিপিএতে দাড়ায় 3.0। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশের সিজিপিএ 3.0 এর মধ্যে হলে আপনি মোটামুটি প্রায় সব ভার্সিটিতে আবেদন করার যোগ্যতা রাখেন। এখন আপনাকে এই জার্মান সিজিপিএ ক্রাইটেরিয়া দেখেই ভার্সিটিতে আবেদন করতে হবে। এই সিজিপিএ থেকে খারাপ হলে মানে রিকুয়েরমেন্ট না মিনলে ইউনি এসিস্ট আপনার আবেদন ভার্সিটিকে পাঠাবে না/ভার্সিটি আপনার আবেদন গ্রহণ করবে না। এখানে একটি বিষয় মনে রাখবেন বেশিরভাগ জার্মান সাধারণ ভার্সিটি(Universität) এবং টেকনিক্যাল ভার্সিটি(TU) সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট এরকম থাকে এবং এই সব ভার্সিটিগুলো এডমিশনের জন্য সিজিপিএ টা খুব খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
কিছু ভার্সিটি সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট থাকে জার্মান গ্রেডে 2.7 যেটা আমাদের সিজিপিএ প্রায় ৬০% মানে বাংলাদেশের ভার্সিটিগুলোর সিজিপিএ প্রায় 2.75।
সামান্য, সামান্য কয়েকটি ভার্সিটি সর্বোচ্চ জার্মান গ্রেডে 3.0 পর্যন্ত এডমিশন নিয়ে থাকে যেটা বাংলাদেশের সিজিপিএ ক্যালকুলেশনে দাঁড়ায় 2.65।
এখন এর নিচে সিজিপিএ দিয়ে কি আবেদন করা যাবে না বা এডমিশন পাওয়া যাবে না?
আসলে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এডমিশন দেওয়ার ক্ষেত্রে সিজিপিএ খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে। হাতে গুনা সামান্য কয়েকটি ভার্সিটি আছে যারা কম সিজিপিএ দিয়ে এডমিশন দিয়ে থাকে বা সিজিপিএ তে তারা এত গুরুত্ব দেয় না। তখন আপনাকে অন্য কোন ক্রাইটেরিয়া দেখিয়ে তাদেরকে কনভিন্স করতে হবে। যেমন, রিসার্চ পেপার, জেআরই, আইএলটিএস, কাজের অভিজ্ঞতা, জার্মান ভাষা দক্ষতা। তবে এটা খুব নগন্য।
এটা হচ্ছে মূলত জার্মান ভার্সিটিগুলোর রিকুয়েরমেন্ট।
এখন সিজিপিএ বিষয় নিয়ে আমরা কিছু ভুল করি। আমি নিচে সেই গুলো আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত, আমরা অনেকে জার্মান ভার্সিটির সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট না দেখেই আবেদন করে ফেলি। অনেক সময় daad সাইটে সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট লেখা থাকে না। আপনাকে ভার্সিটির ওয়েবসাইটে গিয়ে সেই কোর্সের বিস্তারিত অংশে দেখতে হবে। যদি কোন কনফিউশন থাকে তাহলে ভার্সিটিকে মেইল করে জানতে হবে তারা জার্মান কত গ্রেডিং পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করে। এই বিষয়টা পরিষ্কার না হয়ে আবেদন করবেন না৷ না হলে ইউনি এসিস্ট/ভার্সিটি আপনার আবেদন গ্রহণ করবে না। এই জিনিসটা গতবার এবং এবার অনেকে করেছিলো। তাদের আবেদন কিন্তু ইউনি এসিস্ট ভার্সিটিকে পাঠায় নি। তাই আবেদন করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিবেন ভার্সিটির সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট কত।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সব ভার্সিটির সর্বনিম্ন পাসিং গ্রেড(পাস মার্ক) সমান না। তবে বেশিরভাগ ভার্সিটির সর্বনিম্ন পাসিং গ্রেড 2.0। কিছু কিছু ভার্সিটির 2.5। এই বিষয়টি আপনার ব্যাচেলার ট্রান্সক্রিপ্টে লেখা আছে। এখন এই বিষয়ে অনেকে ভুল করে ফেলেন। আপনার যদি সর্বনিম্ন পাসিং গ্রেড যদি 2.5 হয় তাহলে সেইভাবে ক্যালকুলেশন করে আবেদন করবেন৷ ইউনি এসিস্ট বা ভার্সিটিও কিন্তু সেইভাবে ক্যালকুলেশন করবে৷ 2.5 দিয়ে করলে কিন্তু জার্মান গ্রেডে আপনার রেজাল্ট ভিন্ন হবে। তাই এই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে তারপর আবেদন করবেন।
তৃতীয়ত, অনেকে বলে সিজিপিএ কোন ম্যাটার না। বিশেষ করে বাটপার এজেন্সি। হ্যা, জার্মানির প্রাইভেট ভার্সিটিতে সিজিপিএ হয়ত ম্যাটার না কিন্তু পাবলিকে সিজিপিএ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যেটা আমি উপরে বারবার বলেছি। তাই শোনা কথায় কান দিবেন না৷ বুঝে শোনে সব কিছু এনালাইসিস করে আবেদন করবেন।
এখন আসি উপসংহারে। এভারেজ কত সিজিপিএ হলে জার্মানির প্রায় সব ভার্সিটির সিজিপিএ রিকুয়েরমেন্ট ফিল আপ করা যায়?হ্যা, এভারেজ সিজিপিএ হচ্ছে জার্মান গ্রেডে 2.5। এটা বাংলাদেশ সিজিপিএ হিসেবে ক্যালকুলেশন করলে হবে 3.0।
(উপরের লেখাটা শুধু সিজিপিএ এর উপর ভিত্তি করে)

Leave a Reply/আপনার মতামত জানান

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.